Skip to content Skip to footer

নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে

‘বালি ও বোমা’— শব্দবন্ধটি পরিচিত ছিল আমাদের কৈশোর মননে, ২০০২ সালের বোমা বিস্ফোরণের সূত্র ধরে। দেড় যুগ আগের ঘটনা তবু এখনও তাড়া করে ফেরে সে ট্রমা। কিন্তু কোনো কিছুতেই ভ্রমণ থেমে থাকে না। বন্ধু নাজমুল যখন প্রস্তাব করল বালি, কুয়ালালামপুর ইত্যাদি মিলিয়ে অর্ধমাসের ভ্রমণযাত্রার পরিকল্পনা তখন মনটা অজান্তেই সায় দিয়ে উঠল লাফিয়ে। ১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিলের ভ্রমণ-ভাবনা ৩১ মার্চ রাত থেকে ঢাকার আবহাওয়া ছিল বেশ প্রতিকূল। হঠাৎ ঝড়ে পথে পথে গাছ পড়ে আছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বহু জায়গায়। তবু সব পাথর উজিয়ে সকাল সকাল আমরা পৌঁছে গেলাম বিমানবন্দরে। ঢাকা টু কুয়ালালামপুর, তারপর সেখানে কয়েক ঘণ্টার ট্রানজিট নিয়ে বালি।

বালির কথা মনে আসতেই মনে এল অনিবার্য রবীন্দ্রনাথ—

“বালি থেকে পার হয়ে জাভা দ্বীপে সুরবায়া শহরে এসে নামা গেল। জাপান শীতের দেশ; জাভা-বালি গরমের দেশ। জাপান অন্য শীতের দেশের লোকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আপনাকে রক্ষা করতে পারলেও, জাভা-বালি তা পারে নি। আত্মরক্ষার জন্যে যে দৃঢ়নিষ্ঠ অধ্যবসায় দরকার এদের তা ছিল না।”
(জাভাযাত্রীর পত্র)

কুটা সৈকতের পাশে বালি স্যান্ডি রিসোর্টে আমাদের থাকার ব্যবস্থা। ছিমছাম রিসোর্ট আর প্রতিবেশী সমুদ্র। আমি, নাজমুল, রুম্পা আর ছোট্ট বন্ধু মাধুর্য। মধ্যরাতে হোটেলে ব্যাগপত্র রেখে নাজমুল আর আমি বেরোলাম একটুখানি ঘুরতে-ফিরতে।

বালির প্রধান বৈশিষ্ট্য এর রাত্রিকালীন জাগরণশীলতা। সারারাত পর্যটকের বিচিত্র কর্মকোলাহল ও পদভারে মুখর। নিরাপদও মনে হলো। গরমে আমাদের মতো যেন ঘামছে এই সমুদ্রশহরও। তবে সমুদ্রহাওয়া এসে মাঝেমধ্যে দূর করে যায় ঘনীভূত শ্রান্তিও। আমাদের পরিকল্পনা ছিল সবধরনের স্থানীয় খাদ্যের স্বাদ নেয়া কিন্তু বাঙালি জিভ বলে কথা; সকাল থেকেই শুরু হলো উপমহাদেশীয় খাবারের ক্ষুধা ও বাসনা। তাই বিকেল নাগাদ সৈকত থেকে অদূরে শহরভাগে খুঁজে বের করলাম ভারতীয় খাদ্যবিপণি। রুটি-মুরগির অপূর্ব একই সঙ্গে দুর্মূল্য আহারে আমাদের ভীষণ পরিতৃপ্তি ঘটল। বালির প্রসঙ্গ এলে ফিরে ফিরে আসে রাত্রি। রাতের হুল্লোড়, নৃত্য আর ঝকমকিতে অংশ নেয়া বিভিন্ন মহাদেশীয় মানুষের মধ্যে মিশে গেলাম আমরাও। যেনবা উদ্দাম শাখার শিখরে দিনগত সব পাপ ক্ষয় করে প্রাণের বর্ণমালা খুঁজছিলাম হৃৎকলমের গহন গভীরে। নিঃসন্দেহে এই জাগরিত বালিরাত্রির মূল মহিমা সংগীতে আর সমুদ্রে। কত বিচিত্র বাণী ও সুরের কল্লোল যে জলকল্লোলের মতো ভেসে ভেসে আসে আর মুহূর্তমধ্যে নির্জনতম পর্যটকের নিজস্ব সৈকতে আছড়ে পড়ে— তার কথা ভাবছিলাম আমরা। ট্যাটুর দোকানপাটে ভরা বালি। কৌতুহলী হয়ে এক ট্যাটুর আস্তানায় প্রবেশ আমাদের আর ঝোঁকের বসে স্থায়ী এক ট্যাটু এঁকেও ফেললাম বাহুতে আমার। ভরা থাক ট্যাটু-সুধায় আমার স্মৃতিময় একটি দিন আর বালিও। আমরা এই কয়দিনে আরও কয়েকটি সৈকতে গেলাম, ক্যামেনু বাটারফ্লাই পার্কে উপভোগ করলাম প্রজাপতির লীলালাস্য । মন্দির, পর্বত, সমুদ্র সার্ফিং, বোটিং ইত্যাদিতে কেটে গেলে প্রহর। বালিজুড়ে পৌরাণিক আবহ; মানুষের নাম থেকে শুরু করে দর্শনীয় যত ধাম— সবেতেই লক্ষণীয়। উবুদ বাজারে দেখা গেল পাদুকায় পুষ্পের বাহার— মন বলে উঠল আরে এতো পাদুকা পুরাণ। মন্দিরের ঘন্টা, ধূপের গন্ধসুধা, কোথাও মসজিদের চূড়া, মাঝেমধ্যে মায়ারঙের গির্জা— মিলেমিশে ধর্মনিরপেক্ষ আবহের দক্ষিণপূর্ব এশীয় শহরটার প্রেমে পড়ে গেলাম আমরা। আমাদের ট্যুরিস্ট গাইড কাম ড্রাইভার উইডি গাড়ি থামিয়ে মাঝেমধ্যেই দিল গ্রীষ্মের সব রসাল ফলের সন্ধান, যেন প্রবল গরমে পুড়তে পুড়তে গ্রামবাংলার পথে পথে পাওয়া ফলেরই সহোদর এরা। বালির সৈকতে বসে মনের খাতায় লেখা হলো এলেবেলে এমন কিছু পদ্য—

আলতো করে সাগরে নামি,
একলা আমি— সই,
তোকে পেয়ে বাইতে যাই
জলপবনের মই।

সমুদ্রে পেলাম তোমাকে—
যে তুমি, নিঃসঙ্গ আমার,
রুক্ষ খাঁ-খাঁ জীবনের বুকে
ভীষণ সমুদ্রের ধ্বনিবার।

তুমি নাও নি, ক্ষতি কি তাতে,
সমুদ্র ফেরায়নি আমায়,
মৃত্যুনীল শব্দে বলেছে সফেন—
ভুলে যাও বিরুদ্ধ ব্যাকরণ হায়।

দূরাগত রাতের ভেলায় চড়ে
যাই তোমার ঘুম-জাগরণের তটে,
জানি নিরুত্তরই আমার উপহার,
তবু বলি জলকাকলির রটে—

শুভসকাল, শুভসকাল।

সমূদ্র এভাবে তার প্রকাশ্য ও চোরা হাওয়ায় প্ররোচনা জাগিয়ে যায় সৃষ্টির। অনন্ত ধ্বংসেরও কি নয়? পাঠস্মৃতিতে মনে আসে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সমুদ্রফেরত বই কক্সবাজারের সন্ধ্যায় কিংবা উৎপলকুমার বসুর পুরী সিরিজ-এর কবিতা। বালি থেকে অতঃপর কুয়ালালামপুর যাত্রা। সেখানে নেমেই দেখা পেলাম বহু বাংলাদেশি ও ভারতীয়র। দু’জায়গাতেই বিমানবন্দর-ব্যবস্থাপনা মুগ্ধ করার মতো। যদিও ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় মালয়েশিয়াতে চেকিং- এর বাড়াবাড়ি একটু বেশি। অবশ্য নিরাপত্তার জন্য এছাড়া উপায়ও নেই কোনো। যোগাযোগব্যবস্থায় মালয়েশিয়ার অভাবনীয় অগ্রগতি; বিশেষত আমরা যারা ঢাকা ও কলকাতার যানজটে অভ্যস্ত, তাদের আলাদাভাবে চোখে পড়ে। শহরের মধ্যে যাতায়াতে গ্র্যাবের গাড়িগুলো সাশ্রয়ী, বিনা ভাড়ায় শহর ঘোরার সরকারি পরিবহনও আছে কিছু। কুয়ালালামপুরের প্রথম রাতে বাঙালি খাবার খাওয়ার লোভে আমরাও হোটেল থেকে গ্র্যাব ধরলাম, পরিচিত এক প্রবাসী বাঙালি পরিবারের নিমন্ত্রণ রক্ষা করা হলো, তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষে বেশ রাতে দ্রুত ও নিরাপদে হোটেলে ফিরলাম। বালির দ্রষ্টব্য যদি সমুদ্রসৈকত, কুয়ালালামপুরের দ্রষ্টব্য তবে বিপণিবিতান ; ভুবনবিখ্যাত টুইন টাওয়ার থেকে বর্ধিষ্ণু বুকিত বিনতান এলাকার হানিফা মার্কেট পর্যন্ত। একটি রেস্টুরেন্টে পাকিস্তানি মহিলার উদার আহ্বান গ্রহণ করলাম আমরা যিনি কর্মসূত্রে এখানে এসে প্রেমসূত্রে আবদ্ধ হয়েছেন মালয়েশিয়ান ভদ্রলোকের সঙ্গে। তার বোনও আছে এখানে। আর রেস্টুরেন্টের উত্তরপ্রদেশি বাবুর্চি বিয়ে করেছে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি মেয়েকে। সব মিলিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতিগত অবস্থান এই রেস্টুরেন্টে যার ছাপ তাদের পরিবেশিত খাবারেও প্রতিফলিত। বিদেশ-বিভুঁইয়ে দেশি স্বাদের চিকেন বিরিয়ানির সঙ্গে যদি জলপাইয়ের আচার কিংবা খাবার শেষে গোলাপজামুন পাওয়া যায় তবে কার না ভালো লাগে! ভদ্রমহিলা মাঝেমধ্যে নিজ শহর লাহোরযাত্রার কথা বলতেই তার চোখের কোণে আর্দ্রতার উপস্থিতি টের পেলাম যা আমাদের স্বল্প প্রবাসবাসে নিজ দেশ-মাটি আর জলের কথা মনে করিয়ে দিল। কুয়ালালামপুরবাসী মাসুদ ভাই নিজ ব্যস্ততা ফেলে গাড়িতে করে আমাদের নিয়ে গেলেন ভরদুপুরের প্রশাসনিক অঞ্চল পুত্রজায়ায়। প্রবল রোদে দাঁড়ানো দায় সে এলাকায় তবু এর মাঝেও হাজারও মানুষের ভিড়। ভিড়ের মধ্যেই ছবি তুলে আমরা স্মৃতিবন্দি হয়ে রইলাম পুত্রজায়ার মসজিদ, প্রশাসনিক ভবন, স্থাপত্যশোভা ইত্যাদির সঙ্গে। কুয়ালালামপুরের মাঝরাস্তায় কনসার্ট আর খাবারের বাজারে এসে মিলিত হয় যেন সারা বিশ্ব। স্থানীয় গায়কের অচেনা সুরে সুর মেলাতে মোটেও বেগ পেতে হয় না অচিন দেশের মানুষদের, যেন পৃথিবীর সব পথ এসে মিশে গেছে এখানে, অভিন্ন মনোবিশ্বের বোধনে। এই ভ্রমণে আমাদের বেশি সময় অতিবাহিত হলো কেদাহ প্রদেশের লংকাওয়েতে। মালয়েশিয়ার নিবিড় নিসর্গের আস্বাদ-লোভে বিমানের বদলে সড়কপথে যাত্রা করলাম সেখানের উদ্দেশ্যে। দীর্ঘযাত্রায় বাসের জানালা দিয়ে চারপাশে চোখ বুলিয়ে ভাবছিলাম বাংলা ও মালয়ের বিস্তীর্ণ নিসর্গে মিলের কথা। তবে তারা নিসর্গের বুক বিক্ষত করে আমাদের মতো দরদালানে সয়লাব করে ফেলেনি বরং প্রকৃতি ও নির্মিতির মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করেছে। লংকাওয়ে যেতে গিয়ে বহুদিন বাদে ফেরিতে উঠা গেল। সন্ধ্যার অন্ধকারে, মৃদু হাওয়ার দুলুনিতে ফেরি চলছিল আর আমার মনে ভাসছিল ছোটবেলায় কুমিল্লা থেকে ঢাকায় ফেরিযাত্রার কথা। এর মধ্যে টের পেলাম সহযাত্রী নাজমুলের প্রিয় হ্যান্ডি ক্যামেরাটি বাসেই ফেলে এসেছে সে, ফেরিতে উঠার আগ মুহূর্তে টের পেয়ে সেটা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে খুঁজে বের করার ফুরসত মেলেনি বলে মনটা ভার হয়ে রইল। কারণ এতে এই ভ্রমণের অনেক আকর্ষক আলোচিত্র জমা ছিল। লঙ্কওয়ে ছিমছাম জায়গা। অল্প সন্ধ্যাতেই যেন নেমে আসে গভীর রাত। আমরা কটেজ থেকে বেরিয়ে একটিমাত্র রেস্টুরেন্ট খোলা পেয়ে খেতে বসলাম। দোকানি ভারতের চেন্নাইয়ের অধিবাসী। আমি কাজ চালানোর মতো হিন্দি বলতে পারি বলে তার সঙ্গে দেশোয়ালি ভাইয়ের মতো জমে গেল। ডিম পোচ-কে ‘অফ হোয়াইট’ বলে আখ্যায়িত করার বিষয়টি শুনে মজা লাগল বেশ। যাই হোক এখানে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের পাশে সমুদ্রভ্রমণ, ঈগল স্কয়ার, সমুদ্রের পাশে কিনলিম জিওফরেস্ট পার্ক, থাইল্যান্ড সীমান্ত দর্শন- হৃদয় ছুঁয়ে গেল। ফের ফেরি ও সড়কপথে কুয়ালালামপুর যাত্রা। আশ্চর্য বিষয় হল কুয়ালালামপুরের বাস ধরতে গিয়ে তিনদিন পর অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাওয়া গেল ছবিভর্তি সেই ক্যামেরা যা আসার পথে হারিয়েছিলাম আমরা। বিস্মিত হলাম কারণ এসব হারানোর উপমহাদেশীয় অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয় আমাদের কাছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের বিপুল বসতি। আবির, রিপা, মাসুদ ভাইয়ের পর দেখা হলো আফসানা বেগমের সাথে, যিনি একই সঙ্গে একজন কথাসাহিত্যিক এবং এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। কে এল সিসিতে কিনো কোহিনু বলে বিশ্ববিখ্যাত বইয়ের দোকানে ঘোরা হলো তার সাথে। আমি ইন্দোনেশিয়ান কথাকার প্রমোদিয়া অনন্ত তোয়েরের বই খুঁজছিলাম যাঁর লেখায় এ অঞ্চলের আত্মা উঠে আসে অবলীলায়। পেলাম তাঁর অনেক বইসহ সমকালীন মালয় বিশ্বসাহিত্যের বইপত্র। এখান থেকে বেরুতে না বেরুতেই পড়া গেল দারুণ ঝড়-বৃষ্টির কবলে আর বৃষ্টিস্নাত অন্য এক কুয়ালালামপুরের দৃশ্য আমার দৃষ্টির পটে আঁকা হলো যেন। খেয়াল হলো আজ ১৩ই এপ্রিল, চৈত্র সংক্রান্তি। তবে আমাদের বর্ষশুরু কাটল কে এল টাওয়ারে। দিগন্তছোঁয়া উচ্চতায় দাঁড়িয়ে নগর দর্শনের মধ্য দিয়ে। তবে এখানে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টিকেট এবং ছবি তোলা বাবদ যে অর্থ ধার্য করা হয় তাকে অন্যায় বললে অসঙ্গত হবে না। সব পাখি ঘরে ফেরে। আমাদেরও অভিযাত্রা এবার বাংলাদেশের দিকে। পুরনো বছরের জীর্ণ পাতা ঝরিয়ে, পুড়িয়ে, মাড়িয়ে যে দেশ চলেছে নতুন বছরের পেলব ভোরের পানে।

পিয়াস মজিদ

পরিচিতি : জন্ম : ২১ ডিসেম্বর ১৯৮৪। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি শুরু : ২০০০। প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ : নাচপ্রতিমার লাশ (২০০৯, ২য় সংস্করণ ২০১৪)। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ— ৮টি। সম্পাদনা করেছেন শামসুর রাহমান ও রশীদ করীমের নির্বাচিত সাক্ষাৎকারসহ ২৫টি গ্রন্থ এবং ছোটকাগজ ভুবনডাঙা, আর্কেডিয়া

পুরস্কার— এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার ২০১২, সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক সমকাল সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫-তে কলকাতার আদম লিটল ম্যাগাজিন প্রদত্ত তরুণ কবি সম্মাননা।

বাংলা একাডেমিতে কর্মরত। বিদেশ ভ্রমণ: চীন, উজবেকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভুটান, ভারত।